গল্পটি সম্পূর্ন পড়ার অনুরোধ রইলো 🙂, সুন্দরী ছেলে বা মেয়েরা এই গল্প পড়া থেকে বিরত থাকবেন 🙃🙃
* এই কালু এদিকে আয়। (তায়েবা)
*জি আপু( কাছে আসার পর)
এই সাগর দেখ তো একে কেমন লাগে?
দেখতে তো কাক ফেইল রে। এই। তুই কি বাংলা
দেশের নাকি উগান্ডা থেকে আসছিস।
,
বলেই সবাই হাসতে লাগল।
,
== আপু আর কিছু বলবেন?
== তুই যা এখান থেকে। তোকে চেয়ে
দেখলেও আমার বমি আসে।
,
,
আমি সেখান থেকে চলে আসলাম ক্লাসে।
ক্লাসে বরাবর আমার সিটটা বুকিং দেওয়াই থাকে।
সেখানে কেও বসতে সাহস পায় না।
হ্যা সবার পিছেনের সিটটাই আমার জন্য বরাদ্দ।
তাই আমিও গিয়ে বসলাম আমার রাজকীয় সিটে।
আমি সাব্বির। কলেজে নতুন।
মানে এক সপ্তাহ হল কলেজে ভর্তি হয়েছি।
আর আমাকে যে কালু ডাকল সে আমাদের
প্রিন্সিপালের মেয়ে।
কলেজের টপ সুন্দরীদের একজন।
রুপ আছে। তাই বড়াই।
কিছুক্ষন পর তায়েবা আর ওর ফ্রেন্ডরা ক্লাসে আসল।
,
,
== এই কালু পড়া শিখছিস। নাকি আজও বাইরে বের হয়ে
যাবি?( সাগর)
==আরে না। কাল যেভাবে স্যার অপমান করলো।
আজ মনে হয় পড়া শিখছে। তাই না কালা চাঁন৷ ( তায়েবা)
,
বলে সবাই হাসতে হাসতে লাগল।
,
== এতো হাসা হাসি কিসের?
,
স্যারের কথায় সবাই চুপ।
যে যার যার সিটে বসে পরল।
,
== কালু অহ সরি সাব্বির । পড়া হইছে।( স্যার)
== জি না স্যার। পড়া আমি বুঝি না।
== থাক। আর বুঝতেও হবে না। সুন্দর করে ক্লাস
থেকে বেরিয়ে যাও।
,
কালকের মত বেড়িয়ে পড়লাম৷
বাইড়ে এসে মাঠে বসে রইলাম।
আসলে আমি খুব গরীব।
তাই একটু ক্ষ্যাত।
এমনি তে ক্ষ্যাত। তার উপরে গরীব। আবার কালো।
উফফফফফ.....
হুয়াট এ কম্বিনেশন।
একদম সোনায় সোহাগা।
,
,
কি রে কালু এখানে বসে বসে কি করছিস?(তায়েবা)
কিছু না আপু। এমনি বসে আছি।
== তুই শুধু কালুই না একটা জাতীয় বলদ।
,
বলে তায়েবা আর বান্ধবীরা চলে গেল।
কলেজ ছুটি হওয়ার পর আমি হেটে হেটে বাড়ি
যাচ্ছি।
প্রত্যেকদিন হেটেই যাই।
আজও তাই করছি।
এমন সময় একটা গাড়ি এসে আমার কাপড় নোংরা করে
দিল।
চেয়ে দেখি তায়েবার গাড়ি।
তায়েবা মাথা বের করে হাসছে।
তার মানে ইচ্ছা করেই করেছে৷
তার মানে কাল আর কলেজে আসা হবে না।
বাসায় এসে শার্টটা ধুয়ে দিলাম।
মা রান্না করছে।
,
,
== সাব্বির আজকে কাজে যাবি না?
== হুম মা। যাচ্ছি। খাবার হইছে?
== হুম। তুই গোসল করে আয়। আমি খাবার দিচ্ছি।
,
,
আমি খেয়ে গেরেজে চলে আসলাম।
এখানে কাজ করে যা পাই তা দিয়ে লেখাপড়া সংসার
চালাতে হয়।
বিকেল থেকে রাত অব্ধি কাজ করি৷
,
,
== কি রে কাজে আইতে এতো দেরি করলি
কেন?
== চাচা আর কইয়েন না। কলেজ থেকে আওয়ার
সময় পইরা গেছিলাম। তাই দেরি হইল।
== হুম। তারাতারি কাজে লাইগা পর।
,
রাতে কাজ শেষ করে এসে খেয়ে শুয়ে
পরলাম।
পরদিন.....
আজ চাইলেও আজ কলেজে যেতে পারব না। ভাল
কাপরের মধ্যে অই একটা শার্টই আছে।
,
,
== সাব্বির সামনের মাসে বেতন পাইলি একটা নতুন শার্ট
কিনিস।
== হ। মা কিনমু। আইজ আর কলেজে যামু না। দেখি
গেরেজে গিয়ে কিছু অভার্টাইম করতে পারি কি না।
== খাইয়া যাবি না?
== না৷ তুমি খাইয়া নাও। আমি চাচার কাছে গিয়া খামু।
== না। তুমি খাইয়া নাও। আমি চাচার কাছে গিয়ে খেয়ে
নিব।
== আইচ্ছা।
,
,
আমি গেরেজে চলে আসলাম।
,
== সাব্বির, তুই আইজ কলেজে যাস নাই?
== না চাচা।আইজ আর কলেজে যামু না।
== খাইয়া আইছস?
== না। রান্না হয়নাই। তুমার কাছে কিছু আছে খাওন
যাবো?
== অইখানে দুইডা বিস্কুট আছে। খাইয়া নিয়া কামে লাইগা
যা।
,
,
আমি বিস্কুট খেয়ে কাজে লেগে পরলাম৷ আজ
মনটা খুব খুশি লাগছে।
কিছু টাকা বেশি পামু।
সারাদিন কাজ শেষ করে টাকা নিয়ে বাসায় চলে এলাম।
চাল আর কিছু বাজার করে আম্মার কাছে দিলাম।
,
== আম্মা খিদা লাগছে খুব। তারাতারি রাইন্দা খাওন দেও।
== তুই হাত মুখ দুইয়া নে।
== আইচ্ছা।
,
,
হাত মুখ ধুয়ে খেয়ে শুয়ে পড়লাম।
পরদিন সকালে খুব ভোরে উঠলাম।
শার্টটা শুকিয়ে গেছে।
কিছুক্ষন আগের পড়া গুলা রিভিশন করে
কলেজে চলে এলাম।
এসে দেখি তায়েবারা সবাই আড্ডা দিচ্ছে।
,
,
== এই কালু। তোর শার্ট পরিস্কার হল কিভাবে?( তায়েবা)
== কাইল ধুইয়া দিছিলাম।
== তোর কি আর নতুন কাপড় নাই? প্রত্যেক দিন এক
শার্ট পরেই আসিস।
== না গো আফা। নতুন শার্ট কিনবার টাকা কই পামু৷
== শার্ট কিনতে পারিস না তাহলে পরিস কেন? না পরে
কাজ করলেই তো পারিস। ফকির আসছে
কলেজে। শোন তোদের মত কালুর কলেজে
পড়ার কোনো মানে হয় না।ফকির কোথাকার।(তায়েবা)
== হুম আফা। সত্য কথা কইছে।আমরা তো দুই এক
টাকা ভিক্ষা নেই। কিন্তু আপনার যে বন্ধুরা আছে।
শুনছি তাদের বাবা নাকি এমপি মন্ত্রি। তারা তো আমাদের
থেকেও বেশি ফকির। আমরা ২ ১ টা চাইয়া নেই।
আপনাগো বন্ধুর বাবারা তো হাজার হাজার টাকা চুরি কইরা
নেয়।
,
কথাটা বলার সাথে সাথে তায়েবা আমাকে চড় মারল।
,
,
#অবহেলিত_কালো_ছেলেটি
পর্বঃ১..
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন