• Breaking News

    বুধবার, ৩০ মে, ২০১৮

    বললাম না আমি !!!

    প্রাণবন্ত ভালোবাসা ।
    লেখক ঃ মায়া নদীর মন মাঝি ।
    ৭ বছর পর কোন এক শপিংমলে হঠাৎ দেখা । ছোট একটা বাচ্ছা কোলে দারিয়েছিল ।
    চুল গুলো ছোট ছোট , অথচ এক সময় ওর লম্বা চুলের ক্রাশ ছিল ও নিজেই ।
    ৭ বছরে কত পরিবর্তন হয়েছে ।
    ভেবেছিলাম দূর থেকে দেখেই চলে যাবো ।
    কিন্তু মন টাকে আর মানাতে পারলাম না ।
    আমি জানি ও আমাকে চিনতে পারবে না , গেলো ৭ বছরে যে আমারও অনেক পরিবর্তন হয়েছে ।
    কেমন আছো ঋতু ?
    --- জী ভালো , কিন্তু আপনি কে ?
    আমি সৃজন । চিনতে পারছ না ?
    --- না ঠিক চিনলাম না , কোন সৃজন? আমি কি আপনাকে চিনি ?
    আমার যত টুকু ধারণা ছিল তোমার প্রতি , সে ধারণা থেকে বললে তুমি আমাকে আমার চাইতে বেশি চেনো ।
    --- হে আমার কাছে আপনার কণ্ঠ টা বেশ পরিচিত লাগে । কিন্তু আমি আপনাকে কখনো দেখেছি বলে মনে হয় না ।
    ঠিক বলেছ আমার এই চেহারা তুমি কখনোই দেখো নি , কিন্তু আমাকে দেখেছো বহুবার ।
    (৭ বছর আগে )
    ঋতু - কি বেপার এতো দেরি করে আসছ কেন ?
    সৃজন- মানে কি ? প্রতিদিন তুমি দেরি করে আসতে পারো , একদিন আমি দেরি করে আসতে পারি না ?
    ঋতু - কাছে আসবেনা । কি বেপার হাত ধরলে কেন ? হাত ছাড়ো , হাত ধরবেনা ।
    সৃজন- ওকে ধরলাম না তোমার স্বর্ণমতি হাত ।
    ঋতু - কাছে বসছো কেন ? যাও দূরে গিয়ে বসো ।
    সৃজন- কেন ' দূরে যাবো কেন ?
    ঋতু - কারন ডিস্টেন্সে ভালোবাসা বাড়ে ।
    সৃজন - ওহ এই জন্যই তো বলি আমি হাত ধরলে তোমার সমস্যা হয় কেন ? আমি কাছে বসলে তোমার সমস্যা হয় কেন ?
    ঋতু - মানে কি সৃজন ?
    সৃজন - মানে হচ্ছে এখন আর আমাকে ভালো লাগে না , এখন আমি হাত ধরলে তোমার সমস্যা হয় ,
    তা কে সে ' যার জন্য আমার প্রতি তোমার ভালোবাসা কমতে শুরু করছে ?
    যার জন্য আমাকে দূরে ঠেলে দিচ্ছ ...
    ঋতু - কি বলছ আবল তাবল ''-
    সৃজন - না আবল তাবল না যা সত্যি তাই বলছি ।
    ঋতু - দেখো আমি কিন্তু এখন চলে যাবো ।
    সৃজন - ওকে যেতে চাইলে যাও , মানা করছে কে ?
    আমার এতো শখ নাই কারো সাথে জোড় করে প্রেম করার ?
    ঋতু - ওকে ঠিক আছে থাক তুই এখানে , আমি গেলাম ।
    পরের দিন আবারো লেট । আজকে কিছু বলছে না ঋতু ।
    সৃজন - কি বেপার আজকে মহারানী চুপ কেন ?
    ঋতু - সৃজন তুমি কি সত্যি সত্যি আমাকে ভালোবাসো ? নাকি শুধুই টাইমপাস ?
    সৃজন - মানে কি তুমি আমাকে এইরকম ভাবতে পারলা ''ছি ''
    ঋতু - না মানে আমি এটা মিন করে বলিনি ।
    সৃজন - হাত ছাড়ো ,
    ঋতু - কেন ?
    সৃজন - তুমি আর আমার সাথে একটা কথাও বলবা না ।
    ঋতু - প্লীজ তুমি এমন করছ কেন ?
    সৃজন - কিসের প্লীজ হুহ ... তুমি সবসময় আমার সাথে এমন করো ।
    আমার কাছে তো মনে হয় যে আমি তোমার সাথে জোড় করে প্রেম করছি ।
    আমার কাছে তো মনে হয় তুমি আমাকে ছাড়তে পারলেই খুশি ।
    একটু দেরি হলে কাছে আসতে পারবো না , হাত ধরতে পারবো না ইত্যাদি ইত্যাদি ।
    আরে আমি কি ইচ্ছা করে লেট করি নাকি ।
    প্রতিদিন আমাকে ছুটতে হয় চাকরীর পিছে । বাড়ি থেকে বলেছে আমাকে আর লেখা পড়ার খরচ দিতে পারবে না ,
    যদি পারি নিজের টাকা দিয়ে পড়তাম না হয় না ।
    প্রত্যেক টা মুহূর্ত আমাকে একটা না একটা টেনশন নিয়ে চলতে হয় ।
    ( ঋতু কাঁদছে , কাঁদছে তো কাঁদছে । কাঁদতে কাঁদতে কান্নার বন্যা ভাসিয়ে দিয়েছে । )
    সৃজন - ঐ ফেত কান্দুনি কাঁদবা না , কাঁদলে জুড়ে জুড়ে কাঁদো । কান্না শেষ হলে বলিও খুব ক্ষিদা লাগছে খেতে হবে ।
    তাছারা একটা খুসির খবর আছে ।
    ঋতু - ( একটু হাসিমুখে ) কি সেটা ?
    সৃজন - কান্না না থামাইলে কেমনে কমু ।
    আসে পাশে কেউ নাই , ঋতু সৃজন কে জড়িয়ে ধরলো ।
    ঋতু - এবার বল কি সেই খুসির খবর ?
    সৃজন - খবর টা হচ্ছে আমি একটা ল্যাবরাটরিতে পার্ট টাইম জব পেয়েছি । বেতন ও খুব একটা খারাপ না ।
    যাই হোক এভাবেই কেটে যায় কয়েক মাস , ঝগড়া কিন্তু প্রতিদিনই হয় , তবে একটা নিয়ম ভালো আছে যতই ঝগড়া হোক রাতে কিন্তু কেউ কারো সাথে কথা বলা ছাড়া ঘুমাতে পারে না ।
    রাতে যে কথা বলবে সেই কথার মাঝেও ঝগড়া থাকবেই ।
    একদিন সকালে সৃজন অফিসে যাবে , ঋতু সৃজন কে ফোন করে বল্ল তুমি একটু ওয়েট করো আমি আসছি ।
    তো ঋতুর আসতে একটু দেরি হয়েছে ।
    অফিসে যাবার সময় একটু দেরিই কিন্তু অনেক দেরি ।
    এই দেরির কারনে রাগারাগি করে অফিসে চলে গেলো সৃজন ।
    ( ৭ বছর পর শপিংমলে )
    ঋতু - হ্যাঁ সেই যে সৃজন অফিসে গেলো আজ পর্যন্ত আসেনি ।
    ঋতু - একটা কথা বলি ?
    সৃজন - বলো ...
    ঋতু - আচ্ছা তোমার চেহারা এমন হয়েছে কেন ?
    সৃজন - সেদিন রাগারাগি করে অফিসে যাবার পর সেখানে বস ও রাগারাগি করলো আমার সাথে ,
    মন মেজাজ সব খারাপ ছিল , কিছু ক্লুরোসিভ কেমিক্যাল রিসাইকেল করার দরকার ছিল ,
    আর সেখানে রিসাইকেল করার সময় পাশ থেকে একটা কাপড়ের রোল পড়ে সেই বাকেটের উপর আর সেখান থেকে কেমিক্যাল এসে পড়ে আমার মুখে , সাথে সাথে পুড়ে যায় মুখ টা ।
    মনে আছে একদিন তুমি বলেছিলে আমি দেখতে রাজপুত্রের মত , আর এ জন্যই তুমি আমাকে এতো ভালবাসতে ।
    কিন্তু এই পোড়া মুখ নিয়ে আমি কিভাবে তোমার সামনে যেতাম বলো ।
    আমি সবসময় চেয়েছি তোমার জীবনে যেন রাজকুমার এর চেয়ে আরও ভালো কেউ আসে ।
    প্রথমে ভেবেছি তোমার কাছে যাবো , তার পরে ভেবেছি না এই মুখ নিয়ে তোমার কাছে যাবো না ।
    দূর থেকে দেখবো , কিন্তু দূর থেকে দেখলে তো আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারবো না ,। তাই একেবারেই দূরে চলে গিয়েছি ।
    এখন অবশ্য আরও বেশি সুন্দর হয়েছি প্ল্যাস্টিক সার্জারি করে , কিন্তু লাভ নেই , ভালো লাগে না এই সুন্দরতা ।
    যাইহোক তোমার বাবু টা খুব সুন্দর ।
    ঋতু - হুম তবে এটা আমার না আমার ছোট বোনের ।
    সৃজন - ওহ আচ্ছা তুমি তো অনেক চেঞ্জ হয়ে গিয়েছ , চুল ছোট ছোট করে ফেলেছ । না ভালোই লাগে দেখতে ।
    ঋতু - হুম জানি এই চোখে আমি যেমনি হই না কেন , আমি সবসময় ভালোই থাকব ।
    সৃজন - আচ্ছা বাদ দাও পুরনো কথা , তোমার স্বামী কি করেন ?
    ঋতু - একটু হেসে --- আমি এখনো বিয়ে করি নি । আর এই যে ছোট ছোট চুল দেখছ , এটাই তার প্রমাণ ।
    তুমি যাবার পর বাসা থেকে অনেক চাপ দিচ্ছিল বিয়ের জন্য , কিন্তু আমি যে তোমাকে ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করবো না ।
    অন্য দিকে ছোট বোন মিতু ও বিয়ে করতে পারছে না আমার জন্য ।
    ওর বয়ফ্রেন্ড ওকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে , তাই বাদ্য হয়ে চুল গুলো ফেলে দিলাম , বাসা থেকে সবাই আমাকে সবার সামনে পাগল বলে সম্বোধন করতে লাগলো , এখনো করে , সবাই তো এখনো জানে যে আমি পাগল , কিন্তু সবাই এটা জানে না , আমি কিসের পাগল ।
    আমি সত্যি এখনো তোমাকে খুব বেশি ভালোবাসি ।
    সৃজন - আমিও ।
    তার পড়ে তাদের বিয়ে হয় সংসার হয় ।
    সুখি ফ্যামিলি ।
    The End
    ( প্লীজ কেউ কপি করবেন্না )
    ধন্যবাদ সবাইকে কষ্ট করে পড়ার জন্য ।
    আরেকটা কথা - আমি কিন্তু বেশি শিক্ষিত না সুতরাং ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন

    1 টি মন্তব্য:

    Fashion

    Beauty

    Travel