• Breaking News

    বৃহস্পতিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২১

    প্রথম স্ত্রীর সহবাস ১


     বিয়ের তিনমাস পর আজকে প্রথম স্ত্রী সহবাস করলাম,

    আর আজকেই ওকে খুন করবো বলে ঠিক করলাম।। কিন্তু

    কিভাবে খুন করবো তাকে? খুব কষ্ট দিয়ে, নাকি অল্প

    কষ্ট দিয়ে? কিছুই বুঝতে পারছিনা আমি।  

      

    অবশ্য যেভাবেই হোক, ওকে খুন করতেই হবে, এটাই

    ফাইনাল।। মনে মনে ভাবছি কথাগুলো আর ওর মিষ্টি

    মুখের দিকে চেয়ে আছি।। নিষ্পাপ চেহারার মেয়ে

    ও।। একদম সাজানো চেহারা তার।। শ্যামবর্ণের, হালকা

    গোলাপি অধর, টানা টানা চোখ, প্রশস্ত ভ্রু আর লম্বা

    চুল, তাকে দান করেছে এক অপরুপ সৌন্দর্য।। যা

    যেকোনো ছেলের কাছেই আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দু

    হবে।। অবশ্য ওর সৌন্দর্য আজকে আরো কাছ থেকে

    দেখলাম।। খুব আবেদনময়ী মেয়ে ও।।

    আমি তখনও ওর নগ্ন দেহের ওপরই শুয়ে আছি। আর চেয়ে

    আছি ওর শত মায়া মাখানো চোখজোড়ার দিকে।।

    যেনো তার চোখের গভীর অতলে হারিয়ে যাচ্ছি

    আমি।। সে চোখ এক বাধাহীন, গন্তব্যহীন জলের ধারা।।

    হঠাৎ ই আবার চৈতন্য ফিরে এলো আমার।। কি সব ভাবছি

    আমি? কোথায় হারিয়ে যাচ্ছিলাম?? না,,,না এসব

    ভাবলে চলবে না।। কোনোভাবেই তার মায়ায় পড়তে

    চাই না আমি।। তাই তার থেকে ওঠে দাড়ালাম।

    ও হাতটা চেপে ধরলো আমার।। আমি পেছনে ফিরে

    তাকালাম। তারপর আবারো আবেদনময়ী ভঙ্গিতে বলে

    ওঠলো --

    --আরেকটু থাকোনা প্লিজ।।

    ইস্স বোধহয় পাগল হয়ে যাবো আমি।। কোনোভাবেই

    তার কথাকে ফেলতে পারলাম না। কি করবো, তার

    আবেদনে নিজ থেকে সাড়া চলে আসে আমার।।

    তাইতো আবারো নিজের করে নিলাম তিথি কে।।।

    তিথি.........!!!যাকে তিনমাস আগে, একটুও চিনতাম না,

    জানতাম না। তিথি নামের কোনো অসিস্ত্বআমার

    কাছে ছিলোনা।। অথচ আজকে আমার অসিস্ত্বে বেধে

    গেলো সে।। যে অসিস্ত্ব তাকে উপহার দিতে চলেছে

    এক মহা যন্ত্রণার বিষ।। যা তাকে বিলীন করে দিবে

    দুনিয়া থেকে।।

    হঠাৎ ই তিথি আরো শক্ত করে জড়িয়ে নিলো আমায়।।

    ভাবনায় ছেদ পড়লো আবারো।। তাড়াহুড়ো করে ওঠে

    দাড়ালাম এবার, তিথিকে সুযোগ না দিয়ে। আমার

    মাথায় চিন্তাগুলো জাগ্রত হতে থাকলো।। আমি সুন্দর

    সময় খুজছিলাম, তিথিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য।। কিন্তু

    কোনোভাবেই হয়ে ওঠছিলো না।।। অবশ্য এই তিনমাসে

    মেয়েটি কেমন যেনো আমাকে বিশ্বাস আর ভরসা

    করতে শুরু করেছে।। যার ফলে আজকে সুন্দর সময়টা পেয়ে

    বসলাম।। তিথি এবার বিছানা থেকে উঠে দাড়ালো।।

    সুন্দর করে মাথায় হাত বুলিয়ে, যুদ্ধ জয়ী হাসি দিয়ে

    বললো,,,,,

    --যাও ফ্রেশ হয়ে আসো।।

    বলেই ও নিজ থেকেই ওয়াশরুমে ঢ়ুকে গেলো।। আজ প্রথম

    ওর কথায় এতটা লজ্জা দেখতে পেলাম।।

    আমি ঠিক ঠাক সোফায় বসে, মেয়েটিকে বোঝার

    চেষ্টা করছিলাম।। ছিপছিপে দেহের ভাজে ভাজে

    লুকিয়ে আছে এক অপরুপ সৌন্দর্য।যা আমার মতো পুরুষদের

    কাছে প্রচন্ড লালসার বস্তু।। কি অমায়িক মুখের

    ভাষা,,,!!!প্রচন্ড হাস্যউজ্জল বদনের দিকে তাকালেই

    যার প্রেমে হাবুডুবু খেতে ইচ্ছে করে।।।

    এত প্রানোচ্ছল মেয়ে আমার জন্য সত্যিই এক বিশাল

    ভাগ্যের ব্যাপার।।। কখনও কল্পনাতেও আমি তিথি কে

    ভাবার যোগ্য নই।।

    রংধনুর রং

    ফুটপাতে ধুলোপটি খেয়ে বড় হওয়া ছেলে আমি।।

    জানিনা কে আমাকে জন্ম দিয়েছে, আর জানতেও চাই

    না কখনও।। ছোট্ট এই জীবনে না পাওয়ার ভেতরে, যাই

    কিছু পেয়েছি তার ভেতর তেমন কোনো বিশেষত

    ছিলো না।। এখন বলতেই পারি, আমার জীবনের একটাই

    বিশেষ নাম, আর তা হলো তিথি।। কিন্তু সেটাও হয়তো

    আর কিছু সময়ের জন্য।

    ফুটপাতে বড় হয়েও কিছুটা সভ্যতা আমাকে ছুতে

    পেরেছে। জানিনা সবার কাছে এই সভ্যতার নাম কি

    ......??আর কেমন তার পরিনয়....??  

      

    শুধু জানি ...আমার কাজ আমার কাছে সবই সভ্য নিভৃতে

    আকা।। সমাজের অনেক সভ্য মুখোশের আড়ালে, তীব্র

    অসভ্যতার ছাপ আমি কাছ থেকে দেখেছি।। দেখেছি

    চারদেয়াল আর বদ্ধ পরিবেশের ভেতরে মানুষের সেই

    গোপন নির্মমতা।।। তাইতো এতকিছুর ভীড়ে, নিজেকে

    আর আনুষ্ঠানিক সভ্য আর ভদ্রবেশীভাবে তুলে ধরার

    ইচ্ছাটাকে জাগ্রত করতে পারি না।।

    কঠিন থেকে কঠিন বাস্তবতাকে যখন আলিঙ্গন করে,

    নিজেকে এতদুর নিয়ে এসেছি, তখন নিজের কাজ

    থেকে কোনোভাবেই আর নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে

    চাই না।।। ফুটপাতের এক রিকশাওয়ালাকে ছোট থেকে

    নিজের বাবার আসনে চড়িয়েছি।। তার ছোট্ট ইনকাম,

    আর আমার ধান্ধাবাজির কিছু টাকায় চলে যেতো

    কোনোভাবে। তবুও কেনো জানিনা স্কুল কলেজের

    ছেলেমেয়েদের মতো আমার মনের বাসনা গুলো

    পড়াশোনার দিকেই মোড় নিতে থাকে।। তাইতো শত

    কষ্টে হলেও নিজের গায়ে শিক্ষিতের তকমাটা

    লাগাতে পেরেছি।।

    আর তারই মাঝে অন্ধকার জগতে নিজের নাম কিছুটা

    হলেও প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি।। যে নাম অনেকের

    কাছে ত্রাস,,,,,আবার অনেকের কাছে ছোট্ট চশমার

    ফ্রেমে বাধানো ভদ্র এক ছেলে।।

    আজ বাস্তবতার বাবাকে নিয়ে সেই ছোট্ট কুঠির

    টাকে বড় করতে পেরেছি।।। পেরেছি সেই বাবার

    দেয়া নামের একটু স্বীকৃতি।। কেনো জানিনা এতকিছুর

    ভীড়েও, বাস্তবতার বাবার সেই কড়া মেজাজের

    শাসন ----

    --(দেখ রাজ .....এদিকে আয় বলছি, নয়তো ধরতে পারলে

    কান ছিড়া দিমু।।।)

    আজো আমাকে টনক নড়িয়ে দেয়।

    তিথি গোসল সেরে বেরিয়ে আসলো, আমি অপলক

    তাকিয়ে আছি আবারো।। ভেজা চুল থেকে টপটপ করে

    পানি পড়ছিলো, আর সমস্ত শরীর নীল শাড়িতে

    মুড়ানো ছিলো। তিথিও পলকহীনভাবে এক নাগাড়ে

    চুলগুলো মুচতেছিলো। হঠাৎ ই চুলগুলো ঝাপটা মেরে,

    ফিরিয়ে নিলো একপাশ থেকে আরেকপাশে।।

    সামান্য জলের ছিটা এসে পড়লো আমার শরীরে, আমি

    শিউড়ে ওঠলাম।। কি অমায়িক অনুভুতি যে আমার হচ্ছিল,

    তা আর বলে বোঝাবার নয়......!!!

    নিজেকে যেনো কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলাম

    না, তাই একপা দু পা করে এগিয়ে যাচ্ছিলাম তিথির

    দিকে, এবার সে পাশ ফিরে আমার দিকে তাকালো।

    তার চোখে মুখে স্পষ্ট খুশির ছাপ। একটু মুচকি

    হাসছিলো আমাকে দেখে।।। ওর প্রায় কাছাকাছি

    চলে গেলাম আমি।। একটু ছুয়ে দেখার চেষ্টা করলাম

    ওকে, কিন্তু আমার হাতটা ধরে বলল ---

    --যাও, যাও ফ্রেশ হয়ে এসো আগে।। সব পরে হবে।।।

    বলেই আমাকে আলতো ধাক্কা দিয়ে বাথরুমে ঢ়ুকিয়ে

    দিলো।।।।

    শাওয়ারটা ছেড়ে দিলাম।। ক্ষিপ্র গতিতে জলকনা

    আছড়ে পড়ছিলো আমার ওপর।। আমি বসে পড়লাম

    মেঝেতে।।। নিজের অজান্তেই ভাবনাগুলো আমাকে

    ভাবিয়ে তুলছে।। আমি ঠিক করতে যাচ্ছি তো....??

    আমার কোথাও ভুল হচ্ছে না তো .....??

    নাহ্!!! কিছুতেই না আমার দায়িত্ব আমি কিছুতেই

    এড়িয়ে যেতে পারবো না।। শেষ করে দিবো

    তিথিকে। একদম শেষ।।

    কিন্তু গতকাল পর্যন্তও সব ঠিক ছিলো, অথচ আজকে

    কেনো তিথির ওপর এতটা দুর্বলতা ভর করেছে??

    কেনো,,,??

    এ প্রশ্নের উত্তর আমাকেই খুজে নিতে হবে। আর

    বেরিয়ে আসতে হবে অজানা সেই পিছুটান থেকে।।।।

    অবশ্য তিথিকেও আজকে অন্যরকম লাগছে।। অন্যদিনের

    চেয়ে আজকে, আমাকে বেশি প্রায়োরিটি দিচ্ছে।।

    জানিনা কেনো,,,,,?? তবে কি তিথিও আমার ওপর

    দুর্বলতা ফিল করছে??

    শাওয়ারের জল তখনও একই গতিতে পড়ছিলো।। হঠাৎ ই

    তিথি বাইরে থেকে ডেকে বললো --

    --কি হলো,,,?? হয়েছে কি তোমার?? তাড়াতাড়ি বের

    হও।।

    আমি বাস্তবে ফিরলাম।। তাড়াতাড়ি করে, শাওয়ার

    নিয়ে বের হয়ে এলাম। তারপর বিছানায় গা টা

    এলিয়ে দিলাম। প্রায় ঘুমঘুম ভাব ছেয়ে নিয়েছে।। হঠাৎ

    ই ফোনের কাপুনিতে চোখ মেলে তাকালাম।।

    ফোনের দিকে তাকিয়ে আবারো আমার মধ্যে

    অস্থিরতা ভর করলো।। আমার দায়িত্বের কথাটি মনে

    পড়ে গেলো।।

    বিছানা থেকে ওঠে দাড়ালাম। রুমের বাইরে গিয়ে

    তিথিকে খুজতে লাগলাম।।। দেখি তিথি রান্নাঘরে

    রান্না করছে।।

    আজকে রান্না ঘরেও তিথিকে অন্যরকম লাগছে। ও

    রান্না করছিলো আর মুচকি হাসির চোখে আবারো

    আমার দিকে তাকাচ্ছিল, যা সোফায় বসে স্পষ্ট

    দেখছিলাম আমি।।

    হঠাৎ ই ছোট্ট সুযোগের কথা মাথায় এসে ভর করলো

    আমার।। রান্না ঘরে এগিয়ে গেলাম আমি।। তিথির

    নিতম্বে চোখটা আটকে গেলো আমার।। আবারো ছুয়ে

    দেওয়ার ইচ্ছাটা জাগ্রত হলো। জড়িয়ে ধরলাম পেছন

    থেকে তিথিকে। তিথি কিছুটা বিস্মিত হয়ে ওঠলো।।

    তারপর একটু শান্ত চাহনি নিয়ে স্থির হয়ে দাড়ালো ও।

    আর বলে ওঠলো ---

    --রাজ ...!!!ভালোবেসে ফেলেছো আমায়??

    আমি ভড়কে গেলাম ওর প্রশ্নে?? ওকে ধরার বাধনটা

    একটু হালকা করলাম।। ও আবারো বলে ওঠলো --

    --কি হলো রাজ?? উত্তর দিচ্ছনা কেনো?? কঠিন প্রশ্ন

    করে ফেললাম আমি??

    আমি তখনও কিছু বললাম না। শুধু একটু শক্ত করে আবারো

    জড়িয়ে নিলাম ওকে।। ও একটা হাসি দিয়ে বলে ওঠলো

    -----

    --খুন হয়ে যাবো রাজ..............

    কথাটি শুনে আতকে উঠি আমি।। সাথে সাথে ওকে

    ছেড়ে দাড়িয়ে গেলাম দূরে ..........

    .

    .

    (চলবে)

    .

    গল্পঃ অপেক্ষার প্রহর

    পার্টঃ_01

    #রংধনুর_রং

    কোন মন্তব্য নেই:

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    Fashion

    Beauty

    Travel