• Breaking News

    বৃহস্পতিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২১

    বাড়িওয়ালার মেয়ে ৩

     


    বাড়িওয়ালার মেয়ে

    পর্বঃ৩

    #আবির হাসান নিলয়


    জান্নাতঃকি এমন করবে শুনি?

    আমিঃতোমাকে ভালোবেসে বিয়ে করবো

    জান্নাতঃহাহাহাহা(অট্ট হাসিতে গড়ে পড়লো)

    আমিঃএতো হাসার কি আছে😡

    জান্নাতঃআরে রাগছো কেনো?

    আমিঃতার আগে তুমি বলো, তুমি হাসছো কেনো?

    জান্নাতঃতোমার কথা শুনে

    আমিঃকি এমন বললাম শুনি?

    জান্নাতঃএই যে ভালোবেসে বিয়ে করবে

    আমিঃঠিকি তো বলছি।

    জান্নাতঃতো বলতো ভালোবাসা কি?

    আমিঃআমাকে কি তোমার টিচার মনে হয়,যার

    জন্য এসব প্রশ্ন করছো?

    জান্নাতঃওকে,ভালোবাসার মানে জানো?

    আমিঃএতো কিছু জানার আগ্রহ আমার নেই।আমি

    তোমাকে ভালোবাসি ব্যস।

    জান্নাতঃআমার মতো আন্টিকে??

    আমিঃথাপ্পড় দিয়ে দাত ফেলে দিবো।আমি সেসব

    কিছুর জন্য তোমার কাছে ক্ষমা চেয়েছি।এখন

    যদি বলো তোমার হাতের নিচে পা দিয়ে থুক্কু 

    তোমার পায়ে হাত দিয়ে ক্ষমা চেয়ে নেয়?

    জান্নাতঃসেসবের কোনো দরকার নেই।কারণ,আমি

    তোমাকে ভালোবাসি না।

    আমিঃকেনো,বয়ফ্রেন্ড আছে নাকি?

    জান্নাতঃউহু,,,,,বয়ফ্রেন্ড তো নাই।

    আমিঃতাহলে আমাকে মেনে নিতে কি সমস্যা?

    জান্নাতঃআগে ভালোবাসার মানে জানো তারপর

    ভালোবাসি কথাটা বলো।

    আমিঃতখন মেনে নিবে?

    জান্নাতঃভেবে দেখতে পাড়ি

    আমিঃকোনো ভাবা-ভাবী নাই।তোমার আমাকে

    ভালোবাসতেই হবে।

    জান্নাতঃযদি না বাসি?

    আমিঃজোড় করে ভালোবাসা আদায় করবো।

    জান্নাতঃশোনো নিলয়,ভালোবাসা কখনো জোড়

    করে হয় না।ভালোবাসা মনের ইচ্ছাতেই হয়।কিন্তু

    কখন তৈরি হয় সেটা জানা অনেক দুষ্কর। এখন

    বাসায় যাও অনেক রাত হয়ে গেছে।

    আমিঃতুমি যাবে না

    জান্নাতঃহুম যাবো

    আমিঃতাহলে একসাথেই যায় চলো

    জান্নাতঃঠিক আছে।

    দুজন কথা বলতে বলতে ছাদ থেকে নিচে চলে

    আসলাম।জান্নাতদের বাসায় আসাতে জান্নাত

    চলে গেলো।আর আমি আমাদের বাসায় চলে

    আসলাম।।


    রুমে এসে শরিরটা টান করতেই জান্নাতের কথাটা

    মনে পড়ে গেলো। ভালোবাসা মনের ইচ্ছাতে হয়,

    কিন্তু কখন তৈরি হয় সেটা জানা অনেক দুষ্কর।

    আমি কি সত্যি জান্নাতকে ভালোবেসে ফেলছি..!

    কিন্তু এটা কি করে সম্ভব, পেত্নীটার সাথে মাত্র

    কয়েকদিন আগে দেখা।ঠিকমতো কথাও বলি না,

    এরমাঝেই ভালোবাসা।মেয়েটা কতো সুন্দর করে

    আমার পরিবারের সাথে মেলামেশা করে,সবাই

    হ্যাপী।আমি নিজেও তো এমন মেয়ে চেয়েছিলাম,

    যে কিনা আমার পরিবারকে হাসিখুশিতে পরিপূর্ণ

    করে রাখবে।জান্নাতকে তাহলে আমি সত্যিই

    ভালোবাসি....!(নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করছি)


    হঠাৎ বাইরে থেকে আম্মুর ডাক শুনে বাইরে এলাম,,

    আম্মুঃনিলয়,এদিকে আয়

    আমিঃহ্যা বলো

    আম্মুঃএই নে টাকা,তোর আব্বু দিয়েছে।

    হাতে কিছু টাকা ধরিয়ে দেওয়াতে কেমন একটা

    সন্দেহ হলো।আব্বু যে কিপটার কিপটা সেই নাকি

    আমাকে টাকা দিবে।হঠাৎ মনে হলো,হয়তো

    বাজার করার জন্য টাকা দিচ্ছে।কিন্তু এতো রাতে

    তো আমি বাজারে কোনোমতেই যাবো না।

    আমিঃআম্মু তুমি আমাকে মারতে মারতে মেরে

    ফেলো তবুও আমি বাজারে যেতে পারবো না।

    আম্মুঃবাজার করার জন্য টাকা দিচ্ছি না তো

    আমিঃতাহলে...?

    আম্মুঃনিলুর হাত থেকে তোর ফোন পড়ে গেছে।

    হয়তো একদম নষ্ট হয়ে গেছে তাই তোর আব্বু

    নতুন ফোন কেনার জন্য টাকাগুলো দিয়েছে।

    আমিঃনিলু কোথায়?

    আম্মুঃরুমে কেনো?

    আমিঃএমনি,আমি নিলুর সাথে কথা বলছি।

    আম্মুঃকিন্তু.....


    আম্মুর কোনো কথা না শুনেই নিলুর রুমে ডুকলাম।

    আমাকে দেখে অনেকটা ভিতু চেহারা নিয়ে তাকালো।

    মনে হচ্ছে পাগলিটা ভয় পেয়ে আছে।কিন্তু আমি

    তো ওকে মোটেও ভয় দেখাতে আসিনি।

    আমিঃনিলু তুই.....(থামিয়ে দিয়েল

    নিলুঃবিশ্বাস কর ভাইয়া আমি ইচ্ছা করে ফেলে

    দেয়নি।ছাদ থেকে আসার সময় হাত থেকে পরে

    গিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে(কাঁদো কাঁদো স্বরে)

    আমিঃধুর,আমি কি তোকে এসব বলছি নাকি....যা

    হবার হয়ে গেছে।সেটার জন্য কান্না করতে হবে

    নাকি।আর দেখ আব্বু ফোন কেনার জন্য টাকা

    দিয়েছে।কিন্তু আব্বু তো জানেনা শুধুমাত্র ফোনের

    ডিসপ্লে নষ্ট হয়ে গেছে।(সত্যি বলতে ফোন নষ্ট হয়ে গেছে)

    নিলুঃতাহলে তুই আমার রুমে আসছিস কেনো?

    আমিঃগুড নিউজ দিতে,শুনবি?

    নিলুঃহুম

    আমিঃজান্নাতকে তোর কেমন লাগে?

    নিলুঃজান্নাত আপু অনেক ভালো।তবে তোর

    থেকে একটু কম।

    আমিঃহাহাহা,তাই..?

    নিলুঃহুম,এখন বল কি গুড নিউজ

    আমিঃআমি জান্নাতকে ভালোবাসি

    নিলুঃজান্নাত আপু তোকে ভালোবাসে?

    আমিঃনা,তবে তুই হেল্প করলে ভাসবে।

    নিলুঃজান্নাত আপুকে ভাবি বানাতে যতোটা হেল্প

    লাগবে আমি করবো

    আমিঃথ্যাংক ইউ আমার কিউট বোন।এখন চল

    সবাই মিলে খাবার খাবো।

    নিলুঃহুম চল

    তারপর সবাই মিলে খাবার টেবিলে বসে রাতের

    খাবার খেতে লাগলাম।বোনটা অনেক আবেগী।

    আব্বু আম্মু কিংবা আমি কিছু বললেই কান্না করে

    দিবে।তাই বলে সবার কথায় কান্না করে না।অন্য

    কেউ কিছু বললে হয়তো তার সাথে মারামারি করবে

    না হয় আমাদের বলবে।খাবার খাওয়া শেষ করে

    রুমে এসে পড়াশোনা শেষ করে ঘুমিয়ে গেলাম।

    ----------------------------------------------------

    জান্নাতের কথা,,,,,,,

    আঙ্কেলঃকিরে মা তোকে আজ অনেক হ্যাপী

    মনে হচ্ছে,কারণ কি?

    জান্নাতঃঅন্য সময় কি আমি মনমরা হয়ে থাকি?

    আঙ্কেলঃসেটা থাকিস না,তবে আজ একটু তোকে

    অন্যরকম লাগছে।চাইলে বলতে পাড়িস। 

    জান্নাতঃ৪ তলায় নতুন ভাড়াটিয়ার ছেলেকে চেনো?

    আঙ্কেলঃহ্যা,সেদিনই কথা হলো।অনেকটা ভদ্র

    জান্নাতঃভদ্র না আব্বু,একটা বদজাত ছেলে।

    আঙ্কেলঃকেনো,তোকে আবার কি করলো?

    জান্নাতঃআমাকে নাকি ও ভালোবাসে।

    আঙ্কেলঃতা আমার মেয়েটাও কি তাকে ভালোবাসে

    জান্নাতঃআপনার মেয়ে এতোটা সস্তা না।আগে

    আমার মতো হবে তারপর ভেবে দেখবো।

    আঙ্কেলঃতারমানে তুই নিজেও চাস ছেলেটা তোর

    মতো হোক?

    জান্নাতঃকে চাইবে না আব্বু,হারামিটা অনেক

    কিউট।তবে সব সময় আমাকে রাগাতে চেষ্টা করে

    আঙ্কেলঃজানিস তো ভালোবাসার মানুষকে রাগাতে

    সবার ভালো লাগে।

    জান্নাতঃজানি আব্বু

    আঙ্কেলঃতাহলে এতো চিন্তা করিস কেনো,তুই

    চাইলে আগামীকাল ওদের বাসায় তোর আর ঐ

    ছেলেটার বিয়ের কথা বলতে পারি?

    জান্নাতঃআব্বুউউউ তুমিও না🙈🙈

    কোনো কথা না বলেই দৌড়ে রুমে চলে গেলো।

    আঙ্কেলঃপাগলি একটা।

    ------------------------------------------------

    সকালে আম্মুর প্যানপ্যানানিতে ঘুম থেকে উঠে

    বাথরুমে গেলাম।রেডি হয়ে খাবার টেবিলে

    বসতেই হিটলার বাবা পাশে এসে বসলো।

    আমিঃআম্মু তাড়াতাড়ি খাবার দাও

    আব্বুঃএতো তাড়া কেনো?

    আমিঃসেসব তুমি বুঝবে না

    আব্বুঃবুঝবো না নাকি বুঝতে দিবি না?

    আমিঃ...😟(চোখ বন্ধ করে মাথা নাড়তে লাগলাম)

    আব্বুঃএমন করছিস কেনো?

    আমিঃমাথায় ভুত চেপেছে। 

    আব্বুঃতুই কি কখনো ভালো হবি না?

    আম্মুঃএসব কথা এখন বাদ দাও।নাস্তা করো সবাই

    নিলুঃআম্মু আমরা কি কখনো মামা বাড়ি যাবো না?

    আমিঃহঠাৎ এমন প্রশ্ন কেনো?

    নিলুঃসবাই তো নিজ নিজ মামা বাড়ি যায়।জান্নাত

    আপুর সাথে গতকাল উনার মামার বাসায় গিয়ে

    দেখলাম,উনার মামা মামি অনেক ভালো।সব

    জান্নাত আপুর পছন্দের খাবার রান্না করে নিজ

    হাতে খাইয়ে দিলো।

    আম্মুঃ.......(চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে)

    আব্বুঃআমার একটু তাড়া আছে,বাইরে থেকে

    খেয়ে নিবো আসছি।


    আব্বু আর এক মুহূর্ত না দাঁড়িয়ে চলে গেলো।আম্মু

    আমাদের দুই ভাইবোনকে খাবার বেড়ে দিয়ে রুমে

    চলে গেলো।জানি এখন আম্মু রুমে গিয়ে কান্না

    করবে।কিন্তু কাউকে বুঝতে দিবে না।প্রভু কেনো

    আমাদের সাথে এমন করে।আট দশটা পরিবারের

    মতো আমরাও তো সুখে থাকতে চাই।তাহলে কেনো

    বার বার অতিতের অভিশপ্ত কথা স্বরণ করে দাও।।

    নিলু এখনো পুরোপুরি বুঝতে শেখেনি।যখন শিখবে

    তখন আমি এমন কিছু কথা বলবো যখন আর

    মামার বাসায় যেতে আবদার করবে না।মুখে বলবে

    না, মামার বাড়ির কথা।কিন্তু বোনটা তো এখনো

    অনেক ছোট..দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিলুকে খাবার

    খেতে বললাম।খেতে ইচ্ছা করছিলো না।কিন্তু

    আমি না খেলে নিলুও খাবে না।তাই হালকা করে

    খেয়ে নিলাম।


    আমিঃনিলু আজ আমিই তোর সাথে স্কুলে যাবো

    নিলুঃআমি এমনিতেই চলে যেতে পারবো

    আমিঃযেটা বলছি সেটা কর।চল আমার সাথে।

    নিলুঃহুম

    নিলুকে সাথে নিয়ে বাইরে আসতে দেখলাম প্রতিদিনের

    মতো আজকেও জান্নাত দাঁড়িয়ে আছে।তবে আজ

    হয়তো রিক্সার জন্য না।কারণ,সামনে দিয়ে রিক্সা

    চলে যাচ্ছে কিন্তু এতে জান্নাতের কোনো মাথা

    ব্যথা নেই।

    নিলুঃআপু তুমি এখানে কেনো?

    জান্নাতঃওহহ,নিলু।রিক্সার জন্য অপেক্ষা করছি।

    নিলুঃকিন্তু রিক্সা তো চলে গেলো।

    জান্নাতঃওটাতে যেতে ইচ্ছা করছিলো না।আর

    আজ তুমি ওর সাথে কেনো?

    নিলুঃভাইয়া আজ স্কুলে নিয়ে যাবে।

    জান্নাতঃআজ কলেজে যাবে না?

    আমিঃযাবো,ওকে নামিয়ে দিয়ে।

    জান্নাতঃদেরি হবে না?

    আমিঃহবে একটু।


    নিলুঃভাইয়া ঐযে রিক্সা

    আমিঃমামা যাবেন

    রিক্সাঃহো ওঠেন।(দুজন উঠে পড়লাম)

    জান্নাতঃআমাকে নিবে না?

    আমিঃআমরা কলেজের উল্টো দিকে যাচ্ছি

    জান্নাতঃতাতে কি,আমিও যাবো

    নিলুঃহ্যা ভাইয়া,আপুকেও নাও

    আমিঃসরি জান্নাত জায়গা নেই

    জান্নাতঃআমি নিলুকে কোলে নিবো

    নিলুঃহুম,আপু আসো তো তুমি।

    আমি আর কিছু বললাম না।নিলু যদি হ্যাপী

    থাকে সেটাই অনেক।জানি আব্বু আম্মু কতোটা

    কষ্ট পেয়েছে।কিন্তু উনারা কখনো আমাকে কষ্ট

    দেয়নি।তাহলে আমি কেনো আমার বোনকে 

    কষ্ট দিবো..!

    জান্নাত আর নিলু দুজন কথা বলছে।আর আমি

    চুপচাপ বসে পুরানো সেইসব কথা ভাবছি।

    নিলুঃভাইয়া আমি গেলাম

    আমিঃচলে আসছি...(অবাক হয়ে)

    নিলুঃহুম,বাই

    আমিঃসাবধানে বাসায় ফিরিস

    নিলুঃঠিক আছে।

    নিলুকে বিদায় দিয়ে একই রিক্সা নিয়ে কলেজের

    দিকে রওনা দিলাম।

    জান্নাতঃমন খারাপ?

    আমিঃনা তো

    জান্নাতঃতাহলে চুপচাপ কেনো?

    আমিঃএমনি

    জান্নাতঃআজ ক্লাস না করলে কোনো সমস্যা হবে?

    আমিঃনা,কেনো বলতো?

    জান্নাতঃআমি চাইছি,কিছু সময় ঘুরাঘুরি করার

    পর তোমার জন্য একটা ফোন কিনে বাসায় ফিরবো

    আমিঃফোনের কথা তুমি জানলে কি করে?

    জান্নাতঃকারণ,তোমার বেডরুমে সিসি ক্যামেরা আছে

    আমিঃকি বলছো এসব😨

    জান্নাতঃহাহাহা,এতো ভয় পাওয়ার কি আছে,তুমি

    আনমনে বসে ছিলে তাই শুনতে পাওনি।নিলু

    গতকাল তোমার ফোন ভেঙে ফেলেছে।

    আমিঃসেটা বললেই পারো, এতো ঢং করো কেনো?

    জান্নাতঃআমি মোটেও ঢং করি না বুঝলে

    আমিঃজানি তুমি কতোটা ঢঙ্গী

    জান্নাতঃসব সময় আমার সাথে ঝগড়া না করলে

    তোমার ভালো লাগেনা বুঝি?

    আমিঃউহু,আর তোমার ভালোবাসার প্রশ্নের

    উত্তরটা অনেকটাই জানতে পেড়েছি

    জান্নাতঃতাহলে চুপ করে আছো কেনো,বলো।

    আমিঃআগে পুরোপুরিভাবে জানি তারপর

    জান্নাতঃতোমার ইচ্ছা।

    আমিঃহুম


    জান্নাতের সাথে বলতে বলতে বড় একটা মাঠে

    আসলাম।এলাকা একদম অজানা।তাই ঠিক

    ভাবে নাম বলতে পাড়বো না।

    জান্নাতঃভালোলাগার জায়গা গুলোর মধ্যে এটা

    অন্যতম। প্রকৃতির অপরূপ মায়া আছে চারপাশে,

    আশা করি তোমারও ভালো লাগবে।

    আমিঃহুম

    জান্নাতঃচলো ওদিকটাই বসি

    আমিঃবসে কি করবো,তোমার হাত ধরে হাটি

    জান্নাতঃআজ্ঞে না,চলো বসি

    আমিঃওকে চলো।

    মুখোমুখি দুজন বসলাম।আগে ভালোভাবে লক্ষ্য

    করিনি জান্নাতের মলিন চেহারাটা।হাসলে দুগালেই

    ঢোল পড়ে,ঠোঁটের নিচে ছোট একটা তিলও আছে।

    দিন দিন মেয়েটার প্রতি আশক্ত হয়ে যাচ্ছি।

    অনেকটা সময় মিলে দুজন আড্ডা দেয়ার পর

    মল থেকে একটা ফোন কিনলাম।তবে আব্বুর

    টাকার থেকে একটু দামি। এক্সট্রা টাকাগুলো

    জান্নাত দিয়েছে।কারণ,জান্নাতের ইচ্ছামতোই

    ফোনটা কিনেছি।ফোন কেনার পর রেস্টুরেন্ট

    থেকে লাঞ্চ করে বাসায় ফিরে ফ্রেস হয়ে ঘুমিয়ে

    গেলাম।

    ----------------------------------------------------

    আজ আর ভালো লাগছে না,তাই বিকেলবেলা ঘুম

    থেকে উঠে আর ছাদে গেলাম না।বাসার সবাই

    চুপচাপ আছে।ছোটবোন জানেনা,তার কথার জন্যই

    সবাই চুপ হয়ে গেছে।ভাবছেন,কি এমন হয়ছিলো

    যার জন্য এমন নীরবতা। সব জানতে পারবেন

    তবে তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

    আমিঃনিলু...!

    নিলুঃহ্যা ভাইয়া(রুমে এসে)

    আমিঃকি করছিলি?

    নিলুঃটিভি দেখছিলাম।

    আমিঃআম্মু কোথায়?

    নিলুঃরুমে বসে আছে।

    আমিঃজান্নাত হয়তো ছাদে আছে।ওর সাথে গিয়ে

    আড্ডা দে কেমন?

    নিলুঃঠিক আছে।

    আর কোনো কথা না বলে নিলু চলে গেলো।


    মুখ ধুয়ে আম্মুর কাছে গেলাম।জানালা দিয়ে

    বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে।কোনো কথা না

    বলে আম্মুর পাশে বসে গেলাম।আচমকা আমাকে

    দেখে চোখের জল মুছে নিলো।

    আম্মুঃতুই এখানে..?

    আমিঃযারা তোমাদের না বুঝে কষ্ট দিয়েছে তাদের

    জন্য তোমরা কেনো কষ্ট পাবে।

    আম্মুঃএসব কথা বলতে ভালো লাগছে না

    আমিঃতাহলে চোখের জল ফেলছো কেনো?

    আম্মুঃএমনি

    আমিঃনিলু এখনো অনেক ছোট।আগে বড় হোক

    তখন ওকে সব বলবো।দেখবে তখন আর এসব

    নিয়ে নিলু কখনো আফসোস করবে না।কিন্তু

    তোমরা যদি এভাবে কষ্ট পাও তাহলে আমি ওকে

    এখন বলতে বাধ্য হবো।

    আম্মুঃঠিক আছে আর মন খারাপ করবো না।

    আমিঃমন খারাপ করলে তোমাকে একদম পচা

    দেখায় তাই একটু হাসো

    আম্মুঃযা বাদর(হাসি দিয়ে)

    আমিঃনিলু ছাদে গেছে।তাই ওকে খোজার দরকার নেই

    আম্মুঃঠিক আছে।

    আমিঃআমি রুমে গেলাম।

    আম্মুঃহুম

    আম্মুর সাথে কথা বলা শেষ করে রুমে এসে কোনো

    কারণ ছারাই(হুদাই)ফোন টিপতে লাগলাম।

    ------------------------------------------------

    এভাবে কয়েকটা দিন চলে গেলো।সবাই এখন

    আগের মতো হয়ে গেছে।কিন্তু জান্নাতের সাথে

    আমার পরিবার আগের থেকেও অনেক বেশি

    ঘনিষ্ঠ হয়েছে।যখন তখন বাসায় চলে আসে।একে

    তো বাসার সবার পছন্দের নাম জান্নাত।তাই

    কিছু বলার সাহস পাই না।

    রুমে শুয়ে আছি তখন কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে

    ঘুম ভেঙে গেলো।তবে চোখ তখনো বন্ধ করে

    আছি।এটা আম্মু ছাড়া আর কেউ হবে না।

    আমিঃআম্মু একটু মাথায় হাত ভুলিয়ে দাও

    জান্নাতঃঐ আমি তোমার আম্মু লাগি😡

    আমিঃওহহহ জান্নাত তুমি,আমি ভাবলাম আম্মু

    জান্নাতঃচোখ খুলে দেখা যায় না

    আমিঃহুম যায় তো।

    জান্নাতঃআমি গেলাম

    আমিঃকোথায় যাবে?

    জান্নাতঃবাসায় যাবো

    আমিঃতার আগে তোমার জরিমানা নেয়

    জান্নাতঃকিসের জরিমানা

    আমিঃনা বলে আমার রুমে আসছো সেটার জন্য

    একটা পাপ্পি দিবে

    জান্নাতঃহু,ঢং কতো বাই

    উঠে যাবে তখন হাত ধরে টান দিলাম।কিন্তু দুর্ভাগ্য

    ক্রমে জান্নাত ঝোঁক সামলাতে না পেরে আমার

    বুকের উপর পরে গেলো।জান্নাতের দিকে তাকিয়ে

    থাকতে মনের মধ্যে অজানা একটা ফিলিং বেজে

    উঠলো।হাত দিয়ে জান্নাতের গাল স্পর্শ করতেই

    কেপে উঠে চোখ বন্ধ করে নিলো।


    চলবে.................

    কোন মন্তব্য নেই:

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    Fashion

    Beauty

    Travel