• Breaking News

    সোমবার, ২৮ মে, ২০১৮

    গল্প :- 💜💜দুষ্টুমিষ্টি ভালোবাসা💜💜


    রাহাত হোসেন


    পার্ট :- ২
    এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে, আমি এই “মুখে কোন কথা আটকায় না” টাইপ মেয়েটিকে অনেক ভালবাসি …! আজকাল নয়। যখন আমাদের বয়স ৮, তখন থেকেই আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ, বড় হয়ে এই পেত্নীটাকেই বিয়ে করবো। সাধারণত ছোটবেলার ভাবনা- চিন্তাগুলা ছোটবেলাতেই শেষ হয়ে যায়, আমার ক্ষেত্রে হয়নি। কেন যে হয়নি সেটা ভেবেই আমি অবাক হয়ে যাই।
    একটা দিনও ঠিকমত কথা বলতো না, কি একটা ‘ভাব’ যে মারে আমার সাথে! ছোটবেলা থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত যতবার ই ‘প্রিয় বন্ধু’ নিয়ে রচনা লিখতে গিয়েছি,প্রিয় বন্ধু হিসেবে আমি লিখেছি ওর নাম, আর ও লিখেছে আমার নাম, কিন্তু আমাদের মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকতো। তারপরও আমি ওর পিছে লেগে ছিলাম … ।কেন?জানি না।হয়তো ভালোবাসি, তাই ।
    ###ভালোবাসার সংজ্ঞা একেক মানুষের কাছে একেক রকম। আমার কাছে মনে হয়, যাকে ভালোবাসা হয় তাকে সেটা না বললেও হয়। ভালোবাসাটা অনুভব করার ব্যাপার। চিৎকার করে বলার মতো কিছু নয়। আমরা সবাই বাবা-মা কে ভালবাসি, কিন্তু আমরা কি তাদের কাছে গিয়ে কখনো বলি,“মা/বাবা, আই লাভ ইউ”? মুখে হয়তো বলি না। কিন্তু মনে মনে ঠিকই স্বীকার করি। তাহলে, আমরা কেন প্রপোজ করি? বলছি।
    জন্মসূত্রে আমরা মা-বাবা’র সাথে সম্পর্কযুক্ত। নতুন করে কোন সম্পর্কে জড়াতে হয় না। কিন্তু যাকে ভালবাসি, তার সাথে সম্পর্কে জড়াতে চাই বলেই , আমরা এই কাজটা করে থাকি।পশ্চিমাদের মতো গার্ল ফ্রেন্ড,বয় ফ্রেন্ড নামক শব্দে আমি বিশ্বাসী নই। কারণ, এক্স গার্ল ফ্রেন্ড, এক্স বয় ফ্রেন্ড এসব কথা আমরা শুনে থাকি। কিন্তু ভালোবাসার মানুষের সাথে এক্স,প্রেজেন্ট এসব শব্দ শোনা যায়না।
    কেননা, আমার মতে, ভালোবাসার মানুষ একজনই হয়। আমারও আছে, আর সেটা এই ‘পেত্নী’।তাই, আরেফিন এর সাথে ওর ‘ব্রেক আপ’ এর পর ভাবলাম, এটাই সুযোগ।একদিন পেত্নীটার কাছাকাছি চক্কর দিচ্ছি, কিভাবে কি বলবো, ভাবতে ভাবতে। যথারীতি পেত্নীর ‘পিঞ্চ মার্কা’ ডাক,
    পেত্নি :- “বান্দরের মতো লাফাইতেছিস কেন?”
    আমি :- মনে মনে আল্লাহরে বললাম… এইটারেই জুটাইলা!!!“লাফাইলাম কই? হাঁটছি কেবল।
    পেত্নি :- ”“তো আমারে কেন্দ্র করে ঘুরছিস কেন? আমি পৃথিবী আর তুই চাঁদ নাকি? তা চান মানিক… কি বলবি , বলে ফেল।
    আমি:- ”৭০০ মেগাবাইটের মুভি ডাউন লোড দেওয়ার পর ৯০% ডাউন লোডের পর যদি দেখা যায়, যে ইন্টারনেট প্যাকেজ শেষ, তখন যেমন অনুভূতি হয়, তেমন লাগছিলো আমার। সারা রাত কতো রোমান্টিক লাইন মুখস্থ করেছিলাম, কিচ্ছু মনে পরছে না, এখন। পেত্নীটা সামনে না থাকলে নিজের মাথায়ই দু,চারটা গাট্টা মারতাম। আমার অবস্থা বুঝেই কি না কে জানে, পেত্নীটা তার নতুন কেনা চশমার ফাঁক দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে হঠাৎ বলে উঠলো
    পেত্নি :- ,“ঐ গাধা, কি হয়েছে বলত। আমাকে ভালোবাসিস , এটাই তো বলবি নাকি?
    আমি :- ”নিজের কানকেও বিশ্বাস হচ্ছিল না যেন আমার। কোনোমতে বললাম,“হ… হু… না… না মানে… এই তো… মানে হ্যাঁ আর কি।
    পেত্নি :- ”“আমিও তো তোকে ভালবাসি। তো? এতে বলার কি আছে?
    আমি :- ”খুশিতে আমার চোখ দিয়ে যেন পাঁচশ’ ওয়াটের বাল্ব জ্বলে উঠলো, মনে হল যেন গ্যাস বেলুনের মত শূন্যে ভাসছি।
    পেত্নি :- “তোকে আমি এত্তো ভালোবাসি যে, তোর সাথে ঝগড়া না করতে পারলে সত্যিই আমার খাবার হজম হয়না। বিয়ের পর আমার জামাইকে বলে ডেইলি তোর সাথে এসে ঝগড়া করে যাবো,তুই তোর জন্য একটা ভালো দুলাভাই খোঁজ নারে…প্লীজ।
    আমি :- ”আমার চোখে সদ্য জন্ম নেওয়া বাল্বগুলো ফট করে ফিউজ হয়ে গেলো।শূন্য থেকে ধপ করে মাটিতে এসে পরলাম।কুইনাইন চাবানোর মতো মুখ-চোখ করে মনে মনে ভাবলাম, এই মেয়ের সাথে কথা বলার চেয়ে, সাত তালার উপর থেকে লাফিয়ে মরে যাওয়া ভালো, কিন্তু আমি হাল ছাড়লাম না। সিরিয়াস মুড নিয়ে পেত্নীর দিকে তাকালাম,“আমি সেটা মিন করি নাই।
    পেত্নি :- ”“তাহলে কোনটা মিন করছিস?
    আমি :- ”কি বলবো বুঝতে পারলাম না… মনে মনে আবার নিজেকে গালি দিলাম ৪,৫ টা। মুখে বললাম,“দেখ, তুই তো সব বুঝিসই………
    পেত্নি :- ”“কই? না তো। আমি কিছুই বুঝি না…
    আমি :- ”“প্লিজ, বোঝার চেষ্টা কর…” অসহায়ের মতো বলতে গেলাম আমি।
    পেত্নি :- “হবে না… বাদ দে…
    আমি :-”“হবে না মানে?
    পেত্নি :- ”“তুই আমাকে ভালোবাসিস …
    আমি :- না?”“হু।
    পেত্নি :-;”‘তো, আমি কি করবো? জানাতে চেয়েছিস, জানলাম, ব্যাস। আমি গেলাম।
    আমি :- ”“আরে, দাঁড়া । তুই রাজি না?”সরাসরি আমার দিকে তাকাল এবার পেত্নী…
    পেত্নি :- “কি করতে পারবি আমার জন্য?
    আমি :- ”“তুই কি চাস?” থতমত হয়ে বললাম।
    পেত্নি :- “চাকু দিয়ে হাত কেটে আমার নাম লেখতে পারবি?
    আমি :- ”“মানে………” আঁতকে উঠলাম আমি।
    পেত্নি :- “রোজ রাতে আমার বাসার সামনে এসে দাঁড়িয়ে থাকতে পারবি?
    আমি :- ”ভূত এর ভয়ে বাঁচি না, আর আমি ওদের বাসার সামনে দাঁড়িয়ে থাকবো? পাগল নাকি? ভাবতে লাগলাম।
    পেত্নি :- “আমার প্র্যাকটিকাল্ এর লেখাগুলো লিখে দিতে পারবি?
    আমি :- ”নিজের গুলোই করতে পারিনা…আর তোর টা… আমার কিসের ঠেকা।ভাবলাম মনে মনে।
    পেত্নি :- “যখন তখন আমার মোবাইলে টাকা দিতে পারবি?
    আমি :-”টাকা পয়সার ব্যাপারে আমি খুব সেনসিটিভ , চুপ করে থাকাই উত্তম।
    পেত্নি :- “রাত জেগে আমার সাথে ফোনে কথা বলতে পারবি?
    আমি :- ”আমি মারাত্মক ঘুমকাতুরে মানুষ।আমার জন্য সারা দুনিয়া একপাশে আর ঘুম অন্যপাশে । তাই শুধু ঢোক গিলতে লাগলাম।
    পেত্নি :- “দেখলি তো? কিছুই করতে পারবি না তুই, আমার জন্য। যেদিন পারবি, সেদিন বলবি, তার আগে না।”
    ----পাঁচ বছর পার হয়েছে সে দিনটির পর… আমি আমার কথা রেখেছি।ওকে আর বলিনি যে আমি তোকে ভালোবাসি । এখন আমি ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টে পড়ছি। আর পেত্নীটা ফিজিক্সে।অনেকগুলো দিন পার হয়েছে এর মাঝে। একবারের জন্যও মনে হয়নি যে, পেত্নীকে ভালোবাসার কথাটা পাগলামি ছিল। তবে আমি ওকে বুঝতেও দেইনি যে, ওর প্রতি আমার ভালোবাসা এখনো আগের মতোই আছে(বাড়তেও পারে)।
    আমি কিন্তু সেদিনটির কথা ভুলি নি। চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।লুকিয়ে লুকিয়ে টাকা জমাচ্ছি পেত্নীর মোবাইলে দেয়ার জন্য।বার ঘণ্টা ঘুমের বদলে মাত্র দশ ঘণ্টা (!) ঘুমাই এখন।ভূতের ভয় কাটানোর জন্য হরর মুভি দেখা ছেড়ে দিয়েছি একদম।যত ধরনের দোয়া দরুদ পারছি, মুখস্থ করে ফেলছি।প্র্যাকটিকাল করে দিতে পারবো এখন, ‘হিংসা’ কমেছে।সব পারলেও হাত কেটে নাম লেখার ব্যাপারটা নিয়ে টেনশনে আছি।
    নাম লেখার দরকার হলে চাইনিজ ইঙ্ক ব্যবহার করলেই তো পারি…নাকি চাকু দিয়ে হাত কাঁটার ব্যাপারটা বেশি রোমান্টিক? কে জানে… হতেও পারে…। আগে তো আর কোনোদিন প্রেম করিনি যে এসব জানবো। মনে মনে দীর্ঘশ্বাস ফেললাম, কেন যেন আগে কেন প্রেম করি নাই, সেটা নিয়ে খুব আফসোস হচ্ছে,,,,,
    যারা ১ম পার্ট পড়েন নি তারা কন্টাক্ট করলে ইনবক্সে দিয়ে দেব,,,,
    #wait and writing by next part
    রাহাত................

    কোন মন্তব্য নেই:

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    Fashion

    Beauty

    Travel