• Breaking News

    বুধবার, ৩০ মে, ২০১৮

    পাগলামি ভালোবাসা

    গলপঃ # #লিখেছি তোর নাম
    -তুমি হঠাৎ আসো অনলাইনে, আবার হঠাৎ চলে যাও। বলে যাও না কেন?
    -আমি কি হজ করতে যাই নাকি? এত বারবার বলার কি আছে?
    -উফ! অসহ্য!
    -কি অসহ্য?
    -তোমার মাথা!
    -অ
    -আবার অ? বলছি না ও বলবা?
    -অ! স্যরি! ও।
    -তুমি সেদিন বাসের মধ্যে আমার বান্ধবী ইরা কে কি বলছো?
    -বলছি আমার ১০০০ টাকার নোট। খুচরো নাই। ভাড়া দিয়ে দেন।
    -উফ! এটা না। ও নাকি ইঞ্জিনের ওপর বসে ছিলো আর তুমি সামনের সিটে?
    -হ্যাঁ। তারপর ইরা বলল ভাইয়া আসেন অদলবদল করি। খুব গরম লাগছে ইঞ্জিনের ওপর গদিটায়।
    -আর তুমি কি করলা?
    -আমি আমার ব্যাগ থেকে পানির বোতল বের করে দিলাম যাতে ইঞ্জিনের ওপর সিটে ঢেলে দিয়ে তারপর বসে।
    -ওই! তুমি মানুষ হবা না? বাসের সব মানুষ হেসে ফেলছে! ইরা মাইন্ড করছে খুব।
    -মাইন্ড করলে আমার কি?
    -তোমার কি মানে? ও আমার বান্ধবী। আর তোমাকে না বলছিলাম ভাইয়ার সাথে দেখা করতে। ভাইয়া তোমাকে দেখবে বলেছে। দেখা করেছো?
    -আমি কি চিড়িয়াখানার জন্তু? দেখার কি আছে?
    -উফ! আমি ভাইদের একমাত্র বোন। তারা কি না দেখেই আমাকে বিয়ে দিবে?
    -দেখবে না কেন? তারা কি অন্ধ নাকি?
    -অসহ্য! তুমি তোমার বাবা মা কে বলেছো আমার কথা?
    -উনারা কানে শোনেন না!
    -সে কি! কবে থেকে?
    -যেদিন আমাকে বাসায় বিয়ের কথা বলতে বলছো সেদিন থেকে।
    -ওহ! খোদা! তুমি মানুষ হবা না?
    -আমি কি অমানুষ নাকি?
    -উফ! তোমায় নিয়ে আর পারি না!
    -আমার সাথে পেরে ওঠার এত শখ কেন?
    -শখ না খায়েশ।
    -কিসের খায়েশ?
    -তোমার চুলগুলো টেনে তোলার।
    -তোমার সামনে এলে তো তুলবা!
    -কতদিন না এসে থাকবা?
    -যতদিন তোমার বাপে যৌতুক দিতে রাজি না হয়!
    -অই!
    -কি?
    -তোমাকে কিন্তু চাবাইয়া খেয়ে ফেলব যদি সামনে পাই!
    -কয়দিন হলো ভাত খাও না?
    - উফ!তোমার কি কিছুতেই সিরিয়াসনেস নাই?
    -আছে তো।
    -কিসে?
    -অই যে কছিম মামার সাথে লুডু খেলার সময়।
    -আমার অন্য জায়গায় বিয়ে হয়ে গেলে বুঝবা! কি করবা তখন? হু?
    -ভিক্ষুককে টাকা দিব।
    -কেন?
    -আমাকে চিবিয়ে চিবিয়ে খেতে পারবা না তাই!
    -খোদা! পায়ে ধরি! মাফ চাই! ভালোভাবে কথা বলো প্লিজ! প্লিজ!
    - আশেপাশে কেউ নাই তো। কার সাথে বলব?
    -আমার সাথে?
    -তোমাকে তো মেসেজ লিখি!
    -জান বলছি! প্লিজ এমন করে না।
    -কেমন করি?
    -উফ! অসহ্য! আমার মাথা! মুণ্ডু! মুড়ি খাও তুমি বসে বসে!
    -তুমি ভেজে দিও তাহলে। বয়ামে ভরে রাখবনি।
    -শয়তান! তোকে যদি সামনে পাইতাম...! আচ্ছা বাবু আসো আজ বিকেলে দেখা করি একটু?
    -নাহ!
    -কেন?
    -তুমি মাইর দিবা!
    -নাহ। দিব না। দরকার আছে একটু প্লিজ?
    -আমার সময় নাই বিকেলে।
    -কেন কি করবা?
    -ওই তো আমাদের বাড়িওয়ালার মেয়ে নাবিলা, যে আমাকে ওয়াইফাই এর পাসওয়ার্ড দিয়েছিলো ওকে নিয়ে ঘুরতে যাব একটু ধানমন্ডি লেকে।
    -অই! আমি কিন্তু তোকে খুন করে ফেলব!
    -তাহলে আমার নাবিলার কি হবে?
    -তোর নাবিলা মানে?
    -আমার আম্মার তো নাবিলাকেই পছন্দ। আম্মাকে ছবি দেখিয়েছিলাম নাবিলার। আম্মা বলল, কি মিষ্টি মেয়ে!
    -তোকে এমন মিষ্টি খাওয়াব!বাকি জনমে আর মিষ্টি মিষ্টি করবি না!
    - শোনো রূপা! এত কথার দরকার নাই। তোমার সাথে ব্রেক আপ আমার এখন! এই মুহুর্ত থেকে।
    - কী!
    - হ্যাঁ।
    -ঠিক আছে। তোর কাছে আমার যা যা আছে সব দিয়ে দে।
    -আমার কাছে তোমার কিছুই নাই।
    -কিছুই নাই মানে? কত কিছু আছে! আর তাছাড়া গত সপ্তাহেও আমি তোকে টি শার্ট কিনে দিয়েছি একটা।
    -ওটা দিয়ে আমাদের বুয়া ঘর মুছে এখন। দেখবা? ছবি পাঠাবো?
    -কী! ঠিক আছে! তুই যে গত মাসে আমাকে রেস্টুরেন্টে শাড়ি দিলি ওটা ফেরত নিয়ে যা। নাহলে আমি পুড়িয়ে ফেলব এখনি।
    -আমার কাছে ১০০০ টাকার নোট। রিকশা ভাড়া দেয়ার জন্য খুচরা টাকা নাই । তুমি এসে ফেরত দিয়ে যাও।
    .
    শেষ বিকেলে কলিং বেল বাজতেই দরজা খুলে দিলাম। দেখি রূপা দাঁড়িয়ে আছে, হাতে একটা প্যাকেট। মেয়েটা যে এক দুপুর ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদেছে, সন্দেহ নেই। চোখমুখ ফুলে আছে। মেয়েটা এত পাগল!
    বললাম,
    -তোমার হাতে কি?
    -শাড়ি।
    -ড্রাই ওয়াশ করে এনেছো তো?
    -মানে?
    -নাবিলাকে তো এটাই দিব আবার।
    -বদমাইশ!
    -অ! রুমে এসে বসো। আমি গুছিয়ে দিচ্ছি আমার কাছে তোমার যা যা আছে।
    .
    রূপা আমার বিছানায় বসে আছে।
    কাছে গিয়ে বললাম, তোমার হাতটা দেখি একটু?
    -কেন?
    -দরকার আছে।
    .
    আমি রূপার ডান হাতের অনামিকায় আংটি পরিয়ে দিলাম।
    -ওমা! তুমি আমাকে রিং পরাচ্ছ কেন?
    -কি যেনো কথা ছিল?
    -কথা ছিল তুমি চাকুরী পেলে আমাকে একটা লাল শাড়ি কিনে দিবা আর প্রথম মাসে বেতন পেলে একটা স্বর্ণের আংটি।
    -হু, তাই তো দিলাম।
    -অসভ্য, ফাজিল! তাহলে এসব কি ছিল?
    -ভালোবাসা।
    -শয়তান একটা! ভীষণ পাজি তুমি!
    .
    রূপা হাসে, রূপা কাঁদে, রূপা রাগে
    রূপার চোখ অভিমানে জলে ভিজে
    আমার এত বেশি ভালো লাগে!
    .
    কিছুক্ষণ মার দেয়ার পর রূপা এইমাত্র আমার বুকে মাথা রাখলো! সত্যিই মাঝেমাঝে মনে হয়, লাইফ ইজ বিউটিফুল!
    ****সমাপ্ত****

    1 টি মন্তব্য:

    Fashion

    Beauty

    Travel